আন্তর্জাতিক চীন গবেষণা ইন্সটিটিউট(আইআইসিএস) পূর্বে ছিল‘বৈদেশিক সিনোলাজি জাতীয় গবেষণা কেন্দ্র’যা ১৯৯৬ সালের নভেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে এ কেন্দ্র বর্তমান নাম পেয়েছে। এই ইন্সটিটিউের উদ্দেশ্য হচ্ছে সারাবিশ্বে চীনা ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির প্রচার নিয়ে গবেষণা করা। আইআইসিএস নিম্নোক্ত প্রকল্পগুলো পরিচালনা করছে, যেমন বিশ্বব্যাপী চীনা সংস্কৃতি সম্প্রসারণের পথ অনুসন্ধান, প্রাচীনকালের চীনা সাহিত্যের অন্য ভাষায় অনুবাদ এবং এ কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্বদের ইতিহাস পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে এ ক্ষেত্রের কাজ আরো উন্নয়ন করার লক্ষ্যে তত্ত্ব ও পদ্ধতির অনুসন্ধান, বিভিন্ন দেশের সিনোলাজি উন্নয়নের একাডেমিক ইতিহাস অনুসন্ধান, চীনা সংস্কৃতির ওপরে বিদেশী সংস্কৃতির প্রভাব মূল্যায়ন করে বিভিন্ন দেশের চীন সম্বন্ধে তৈরি ধারণার উৎস অনুসন্ধান এবং ক্রস-কালচার কমিউনিকেশনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিশ্বব্যাপী চীনা সংস্কৃতির প্রভাব নিয়ে গবেষণা।
এ ইন্সটিটিউটের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর ওভারসিস সিনোলাজি, দ্য রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব চাইনিজ কালচার এবং দ্য সেন্টার ফর এসেসমেন্ট অব ওভারসিস ইমপেক্স অব চাইনিজ কালচার। এ ইন্সটিটিউট থেকে কয়েকটি একাডেমিক জার্নাল প্রকাশিত হয়, যেমন ইন্টারন্যাশনাল সিনোলাজি, কমপ্যারেটিভ লিটারেচার এন্ড ক্রস-কালচারাল স্টাডিজ, নিউজলেটার অব ইন্টারন্যাশনাল কনফুসিয়াস স্টাডিজ, জার্নাল অব দ্য হিস্টোরি অব ওভারসিস চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ এডুকেশন। তাছাড়া, এ ইন্সটিটিউটের কয়েকটি শাখা সংস্থা আছে, ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন ফর চাইনিজ কালচার স্টাডিজ, ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন ফর চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ এডুকেশন এবং ইন্টারন্যাশনাল লিয়াজো কমিটি অব ইন্টারন্যাশনাল কনফুসিয়াস এসোসিয়েশন।
আইআইসিএস-এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক গবেষণার মাধ্যমে গুণী মানুষ সাধন করা। তুলনামূলক সাহিত্য ও ক্রস-কালচারাল গবেষণা বিষয়ক মাস্টার ও ডক্টরেট প্রোগ্রামসহ চীনা সংস্কৃতি গবেষণা ও আন্তর্জাতিক সিনোলজি বিষয়ের মাস্টার প্রোগ্রামও আছে। এ প্রোগ্রাম দেশী-বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত। সকল কোর্স চীনা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় শেখানো হয়।
প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই ইন্সটিটিউটের অধীনে ৪০টিরও বেশী জাতীয় ও প্রাদেশিক শ্রেণীর গবেষণা প্রকল্প সম্পূর্ণ করা হয়েছে এবং ৭৬টি বই, ২টি অভিধান, ২৯টি অনুবাদ বই, ৩টি পাঠ্যপুস্তক এবং ১০০টিরও বেশী একাডেমিক প্রবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক গবেষণায় অসাধারণ অবদানের জন্য এই ইন্সটিটিউটটি টানা তিন বছর পুরস্কার পেয়েছে। বর্তমানে ইন্সটিটিউটটির সাথে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, ভ্যাটিকান, সুইজারল্যান্ড, রাশিয়া, ভারত, জাপান, উত্তর কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হংকং, ম্যাকাও এবং তাইওয়ানের ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আছে। তাছাড়াও এই ইন্সটিটিউটের পক্ষ থেকে অন্যান্য চীনা একাডেমিক সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা চালানোর মাধ্যমে ১০০ বারেরও বেশী লেকচার ও ৭০টিরও বেশী আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে।