বিএফএসইউ’র গ্রন্থাগার একটি ছয় তলা ভবনে অবস্থিত। গ্রন্থাগার ভবনটির মোট আয়তন ২৩ হাজার বর্গ মিটার। বিএএফএসইউ’র বহুভাষী বৈশিষ্ট্যের প্রতীক এবং আন্তর্জাতিকতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গ্রন্থাগারের সামনের দেয়ালে ৫৫টি ভাষায় ‘গ্রান্থাগার’ শব্দটি নকশা করা হয়। ভবনটির কাচের ছাঁদে বিভিন্ন বর্ণমালা দিয়ে নকশা করা হয়। সূর্যের আলো থাকলে যার ছায়া যেন একটি জ্ঞানের সাগর সৃষ্টি করে। সুপরিচিত চীনা উক্তি – ‘অধ্যবসায় হল জ্ঞানের পাহাড়ে ওঠার উপায়’ – এর প্রতীক হিসেবে গ্রন্থাগারের ‘বইয়ের পাহাড়ে’ উঠার সিঁড়িটি প্রধান হলঘরের মাঝখানে অবস্থিত। পর্যাপ্ত খোলা জায়গা এবং বিপুল সংখ্যক বইয়ের সুবিন্যাসে আধুনিক গ্রন্থাগারের অপরূপ শৈলী ফুটিয়ে তোলা এ গ্রন্থাগারটি যেন মানুষ ও বইয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দলিল।

এ গ্রন্থাগারে সর্বমোট ১২ লক্ষ ৬৪ হাজার বই, ৪৮২ হাজার ই-বই, ১১৭৪টি  সাময়িকী এবং চীনা ভাষাসহ বিভিন্ন ভাষার ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংক্রান্ত ৫৬টি উপাত্ত-ভাণ্ডার (database) আছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএফএসইউ’র বহুমুখী-বিষয়ক একাডেমিক (মালটি-ডিসিপ্লিনারি) উন্নয়নের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ক বইয়ের সংগ্রহও তৈরি হয়েছে যার মধ্যে আইন, কূটনীতি, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বইগুলো রয়েছে।

বিএফএসইউ গ্রন্থাগারে ২০০০ আসন ও ১৮টি পাঠকক্ষ রয়েছে। আরো রয়েছে সম্মেলন কক্ষ, প্রদর্শনী কক্ষ ও কফি বার। এখানে শুধু যে জ্ঞান অর্জনের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তা নয়, পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করার জন্যও জায়গা রাখা হয়েছে। এ গ্রন্থাগার পাঠকের সর্বোচ্চ সুবিধার লক্ষ্যে তৈরী করা হয়েছে। গ্রন্থাগারটিতে ২৪ ঘন্টা স্ব-সেবার মাধ্যমে বই জমা দেয়া ছাড়াও অন্যান্য সেবার মধ্যে আছে মুদ্রণ, ফটোকপি, স্ক্যান ও বই নেওয়ার সুব্যবস্থা। মাল্টিমিডিয়া ব্যবস্থাপনা শুধু বই পড়ার অভিজ্ঞতাই নয় বরং সৃজনশীলতা উদ্দীপিত করতেও সহায়তা করে। আধুনিক যুগের জ্ঞান ভিত্তিক অর্থনীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে এ গ্রন্থাগারটিতে কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করা হয়।

সমৃদ্ধ বই সমাহার, আরামদায়ক পরিবেশ, পাঠক-মুখী সেবা আর আধুনিক সুবিধা সম্বলিত গ্রন্থাগারটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশোনা, গবেষণা ও আলোচনার একটি উপযুক্ত জায়গা।